সংবাদ শিরোনাম:

বন্ধুকে নিয়ে বড় বোনের বাড়িতে চুরি

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

মাছুম রানা:

গাজীপুরের কাপাসিয়াতে বড় বোনের হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় বন্ধুসহ ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে নিজের বোনের ঘরে বন্ধুকে নিয়ে চুরি করার পরিকল্পনা করেন। এ সময় বোন চিৎকার করলে তার হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘরে থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নেন।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুর পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিপিএম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে গত ২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টায় কাপাসিয়া উপজেলার পূর্ব ভিটিপাড়া গ্রামের দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী মো. মোশারফ হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ বেগম শিমুর (৩৯) মরদেহ নিজ বসত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. সিরাজ উদ্দিন বেপারী কাপাসিয়া থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করলে শাহনাজ বেগম শিমুর ছোট ভাই কামরুজ্জামান রুবেল (৩৬) ও শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী থানার মামদাবাড়ি গ্রামের আস্কর আলীর ছেলে মো. মিনাল ওরফে মিষ্টারকে (২১) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
গাজীপুর পিবিআই এর উপ-পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালেহ ইমরান বিপিএম বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পরপরই কাপাসিয়া থানা পুলিশের পাশাপাশি গাজীপুর পিবিআই এর একাধিক টিম মামলাটির রহস্য উদ্‌ঘাটনে ছায়া তদন্তে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মো. কামরুজ্জামান রুবেলকে বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে, একই দিন মো. মিনাল ওরফে মিষ্টারকে ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে একই দিন গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে জানান, শিমুর ছোট ভাই রুবেল গাজীপুরে একটি আবাসিক হোটেলে চাকরি করতেন। পাঁচ মাস আগে রুবেল ওই হোটেলের চাকরি ছেড়ে দিলে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। এ সময় তার অনেক ঋণ হয়। ঋণে জর্জরিত রুবেল ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে বোন শিমুর বাসায় চুরির পরিকল্পনা করেন এবং ঘটনার দুইদিন আগে মো. মিনাল ওরফে মিষ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনার দিন বিকেলে মিনাল জয়দেবপুর রেল স্টেশনে আসেন। এ সময় রুবেল ও মিনাল একটি ব্যাগের মধ্যে একটি সুইচ গিয়ার চাকু, প্লাস, গামছা ও কাঁচি নিয়ে ট্রেনে করে শ্রীপুর স্টেশনে নামেন। সেখান থেকে বরামা ব্রিজ পাড় হয়ে পায়ে হেঁটে তারা শিমুর বাড়ির সামনে আখ খেতে লুকিয়ে থাকে। এরপর রাত ১২টার দিকে রুবেল-মিনাল শিমুর বাড়ির সীমানা প্রাচীর টপকে বাসার ছাদে উঠেন। সেখান থেকে ঘরের ভেতরে ঢোকেন। এ সময় সাড়া পেয়ে শিমু চিৎকার শুরু করলে মিনাল সুইচ গিয়ার ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখায়, কিন্তু শিমু চিৎকার না থামালে গামছা দিয়ে তার মুখ চেপে ধরেন। রুবেল শিমুর হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। রুবেলকে যাতে চিনতে না পারে সেজন্য শিমুর চোখ, মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলেন। তখন মিনাল শিমুর মুখে আঘাত করে এবং শিমুর বুকের ওপর বসে গলায় চেপে ধরেন। এতে মারা যান শিমু। এরপর তারা আলমারি খুলে স্বর্ণালংকার ও তিন হাজার টাকা, শিমুর মোবাইল ফোন নিয়ে নিয়ে চলে যায়।
গাজীপুর পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বিপিএম বলেন, নিহতের ভাই রুবেল ও মিস্টার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বর্ণ বিক্রির অবশিষ্ট টাকা ও স্বর্ণ উদ্ধারে অভিযান চলছে।

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *