সংবাদ শিরোনাম:

রকিয়া প্রেমের জের ধরে অবসচেতন অবস্থায় তুলে দিল স্বামীকে প্রেমিকের হাতে

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

শাহাজাদী সুলতানা:

পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালালেও সন্তানদের কথা চিন্তা করে স্ত্রীকে বারবার ফিরিয়ে আনেন স্বামী। এবার ভাতের সাথে ওষুধ খাইয়ে সেই স্বামীকে মেরে তার লাশ রাতের আঁধারে প্রেমিকের কাছে তুলে দেন মুন্নি বেগম। এরপর একটি পুকুর থেকে স্বামী মোহাম্মদ আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গত শুক্রবার বিকেলে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা ইউনিয়নের মাইজপাড়া গ্রামের রাড়ী কান্দি এলাকায় স্বামীর বাড়িতেষবসে এভাবেই মোহাম্মদ আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করছিলেন স্ত্রী মুন্নি বেগম।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চাঁন মিয়া মাদবরের পুকুর থেকে মোহাম্মদ আলী মাদবরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মোহাম্মদ আলী মাদবর(৪০) শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার জপসা গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিন মাদবরের ছেলে। পেশায় তিনি একজন সিএনজি চালক ছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৯ বছর আগে মোহাম্মদ আলী মাদবরের সঙ্গে বিয়ে হয় জাজিরার চেরাগ আলী বেপারি কান্দির মুন্নি বেগমের। তাদের সংসারে দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মুন্নি বেগম বেশ কয়েকবার তার পরকীয়া প্রেমিক মামুন চৌকিদারের সঙ্গে পালিয়ে চলে গিয়েছিলো। কিছুদিন আগেও মুন্নি বেগম মামুনের সঙ্গে পালিয়ে চলে যায়। কিন্তু ছোট সন্তানদের কথা ভেবে মোহাম্মদ আলী মাদবর তার স্ত্রী মুন্নিকে আবার ফিরিয়ে আনে।
গত বুধবার রাতে মোহাম্মদ আলী মাদবর নিখোঁজ হওয়ার পরদিন পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদ আলীর স্বজনরা জানতে পারে মোহাম্মদ আলী ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল। এরপর বাড়িতে এসে মুন্নি বেগমের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে ভাতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীকে পরকীয়া প্রেমিক মামুন ও তার সঙ্গীদের কাছে তুলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মুন্নি বেগম। পরে মুন্নি বেগমকে আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী।
নিহত মোহাম্মদ আলী মাদবরের স্ত্রী মুন্নি বেগমকে একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, আমি চলে গিয়েছিলাম। এরপর ঝামেলা করে আমাকে আবারও এনেছিল মোহাম্মদ আলী। এই বাড়িতে আসার পরেও মামুনের সঙ্গে আমার মোবাইলে যোগাযোগ হয়েছিলো। মামুন আমাকে বলেছিলো মোহাম্মদ আলী আমার (মামুনের) নামে মামলা করেছে। মামলা যদি চলমান থাকে তাহলে মোহাম্মদ আলীর ক্ষতি করবো। কিন্তু আমি তাকে বলেছিলাম, মোহাম্মদ আলী মামলা তুলে ফেলবে, ক্ষতি করার দরকার নেই।
কিন্তু সে আমার কথা শোনেনি বরং আমাকে ভয় দেখিয়ে বলেছে, ‘আজ ঘুমের ওষুধ দিয়ে যাবো, এই ওষুধ মোহাম্মদ আলীকে খাওয়াতে হবে। নয়তো তোমার মেয়েদের মেরে ফেলবো।’ মামুনের এমন কথায় আমি মোহাম্মদ আলীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছি। এরপর মামুন এসে মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে গেছে। মামুন যখন মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে যায়, তখন ওর সঙ্গে আরো দুইজন ছেলে ছিলো আমি তাদের চিনি না। যখন মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে যাচ্ছিলো, তখন মোহাম্মদ আলী অজ্ঞান ছিলো।
নিহতের বড় বোন আয়েশা বেগম বলেন, বারবার চলে যাওয়া সত্ত্বেও আমার ভাই মুন্নিকে এনেছিলো। কিন্তু বুধবার রাতে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে পরকীয়া প্রেমিক দিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে মুন্নি বেগম। আমি আমার ভাইর হত্যাকারীদের বিচার চাই।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুরের নড়িয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো: আহসান হাবীব বলেন, নিহত মোহাম্মদ আলীর পরিবারে দাম্পত্য কলহ ছিলো। বিষয়টি নিয়ে থানায় বেশ কয়েকবার অভিযোগ করা হয়েছিলো। মোহাম্মদ আলীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেছিলো স্বজনরা। বিষয়টি থানা পুলিশ টের পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *