আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনি দৌড়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াবেন না প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বরং শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (৩ জুন) নির্বাচনি তহবিল কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে এবং ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠকে এই কথা বলেছেন ডেমোক্র্যাট এই প্রার্থী। তার এই বক্তব্য এমন সময় এলো যখন গত সপ্তাহে প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে তার দুর্বল পারফরম্যান্সকে কেন্দ্র করে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান দলের অনেকে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
বাইডেনের ফোনালাপের বিষয়ে অবগত এমন দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নির্বাচনি তহবিল টিমের সদস্যদের মনের সংশয় দূর করতে তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বাইডেন। তাদের আশ্বস্ত করে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
নির্বাচনি তহবিল টিমকে পাঠানো একটি ইমেইল বার্তায় বাইডেন বলেন, ‘কেউই আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছে না। আমি কোথাও যাচ্ছি না। এই প্রতিযোগিতায় আমি শেষ পর্যন্ত আছি।’
এই বার্তা শেয়ার করে ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে বাইডেনের সমর্থকদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তহবিল টিম।
অনলাইনে এবং সরাসরিভাবে ২৪ জন ডেমোক্র্যাট গভর্নর এবং ওয়াশিংটনের মেয়রের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় কথা বলেছেন বাইডেন। তখন বিতর্কে দুর্বল পারফরম্যান্স করা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য নিজের যোগ্যতার বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেন ৮১ বছর বয়সী মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট।
বৈঠক শেষে তাদের মধ্যে শুধু নিউ ইয়র্ক, মিনেসোটা এবং ম্যারিল্যান্ড—এই তিন অঙ্গরাজ্যের নেতারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় বিতর্কে দুর্বল পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনার জন্য বাইডেনের প্রশংসা করে তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
ম্যারিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মোর বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। আমরাও তার পাশে দাঁড়াব।’
মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়াল্জ বলেন, ডেমোক্র্যাটিক গভর্নরস অ্যাসোসিয়েশন এর চেয়ারপার্সন বলেছেন, বৃহস্পতিবারের বিতর্কে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাইডেনের পারফরম্যান্স খারাপ ছিল। তবে তিনি মনে করেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য বাইডেন একজন যোগ্য প্রার্থী।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের বয়স সবচেয়ে বড় একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোটাররা মনে করছেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি অনেক বয়স্ক।
৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন কেমন করবেন এ নিয়ে তার সহকর্মী ডেমোক্রেটদের মধ্যেও ক্রমাগত সংশয় বাড়ছে। এমনকি তার মানসিক ও শারিরীক সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এর মধ্যে বিশেষ করে টেক্সাসের কংগ্রেসম্যান লয়েড ডগেট তো সরাসরি বাইডেনের প্রত্যাহার চেয়ে বসেছেন।
এক বিবৃতিতে ডগেট বলেছিলেন, ‘বাইডেন নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার মতো বেদনাদায়ক ও কঠিন সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমি আশাবাদী।’
গত মাসে দুই সপ্তাহের মধ্যে দুবার ইউরোপ সফর করেন বাইডেন। ১৫ জুন ইতালি থেকে ফিরেই সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে নির্বাচনি তহবিল সংগ্রহের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি এবং সেদিনই ওয়াশিংটন ডিসিতে ফিরে যান। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বাইডেন বলছিলেন, বিতর্কের আগে পরপর কয়েকবার ভ্রমণের জন্য তিনি ক্লান্ত ছিলেন, যার প্রভাব পড়েছে বিতর্কে।
এর আগে, অবশ্য হোয়াইট হাউজ দাবি করেছিল, ঠাণ্ডা লাগার জন্য বিতর্কে দুর্বল পারফরম্যান্স করেছিলেন বাইডেন।
বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন কিনা এ বিষয়ে বুধবার জানতে চাওয়া হলে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিরে বলেন, ‘অবশ্যই নয়।’