শাহাজাদী সুলতানা প্রতিনিধি জাজিরা (শরীয়তপুর):
শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলা পৌরসভাধীন সরকারি জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি সরকারি জাতীয় করন করা হয় ২০১৮ সালে!
তখন থেকেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন এটিএম মতিউর রহমান। সেই থেকে প্রায় ৬ বছর যাবত কোন এক অজানা কারনে নিয়োগ হয়নি প্রধান শিক্ষক। তিনিই দায়িত্ব পালন করে আসছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসবে। কিন্তু তারপর থেকেই আস্তে আস্তে তার স্বেচ্ছাচারিতা বেড়েই চলেছে অভিযোগ একজন সহকারী শিক্ষকের।
স্কুল টি সরকারি হলেও সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা কোন সুবিধা পাচ্ছে না নিজের মতো করে আদায় করেন অর্থ নিজের মতো করেন খরচ। বিভিন্ন অযুহাতে ছাত্র ছাত্রীদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে নিজের ইচ্ছে মতো বেতন ভাতা, ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীদের নিকট এডমিড, মিলাদ ও কোচিংয়ের ফি বাবদ ১৮ শত টাকা ছাত্র ছাত্রীদের কাদে চাপিয়ে দেয়, বিশাল আর্থিক বোঝা। এবং যা সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে বিনা রসিদে আদায় করে সহকারী প্রধান শিক্ষক সম্পূর্ণ অবৈধভাবে মতিউল ইসলাম সেলিম ও শেখর প্রসাদ ভৌমিক, যেটা ছিলো সম্পূর্ণ কারন এডমিড ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ফি ফরম ফিলাপের ফি,র সাথে আগেই নিয়ে নেওয়া হয়েছিলো।
বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আদেশকৃত পরিপত্র অনুযায়ী কোন সরকারি স্কুলে বিনা রসিদে বা পরিপত্রের বাহিরে অর্থ আদায় করা নিষিদ্ধ বলা আছে তখন প্রায় ২৬০ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর থেকে সম্পূর্ণ ভাবে মাথা পিছু ১৫ শ থেকে ১৮ শ টাকা নিয়ে তাঁদের প্রবেশ পত্র প্রদান করেন ওই শিক্ষক যা ছিলো পুরোপুরি অবৈধ।
তারপরে জানুয়ারিতে নতুন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি নিয়ে ও করেছেন বানিজ্য, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে লটারি করে দুই টি সেকশনে ভাগ করে ৬০ জন করে মোট ১২০ জন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করার কথা পরিপত্রে লিখা থাকলেও সেখানে করেছে অনিয়ম প্রায় ১০ জন্য ছাত্র ছাত্রী ভর্তি করেছেন আর্থিক সুবিধা নিয়ে কিন্তু বাকি শিক্ষকদের বলেন ইউএনও মহোদয়ের সুপারিশ আছে বলে ভর্তি নিয়েছেন ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম মতিউর রহমান। এক অনুসন্ধানে দেখা যায় সরকারি ভাবে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের নিকট ভর্তি ফি বাবদ
ভর্তির জন্য যে যে খাতে অর্থ আদায় করেছে তার কোন কিছু ই করেনি স্কুল কতৃপক্ষ।
যেমন কম্পিউটার আইসিটির জন্য প্রতিটি ছাত্র ছাত্রীর কাছ থেকে ২৪০ টাকা ম্যাগাজিন ৬০ টাকা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ৭৫ টাকা, দরিদ্র তহবিলের জন্য ২৫ টাকা,কৃষি বাগানের জন্য ৩০ টাকা,গবেষণা গাড় এর জন্য ৪০ টাকা, পরিচয় পত্রের জন্য ৫০ টাকা করে অর্থ আদায় করলেও এসব কোন কিছু ই করেনি স্কুল কতৃপক্ষ।
এই অর্থ আদায় করে নিজের ইচ্ছে মতো কাজে ব্যাবহার করেন এটিএম মতিউর রহমান, কাউকে জবাবদিহি করতে হয় না তার,, কারন তার স্থানীয় পর্যায়ে পাওয়ার আছে, এবিষয়ে কোন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। যদিও দুই একজন তার এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে তবে তাঁদের শোকজ করার হুমকি দেন।
বর্তমানে একজন সৎ ন্যায় পরায়ন সহকারী শিক্ষক আমাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন বছরের শুরুতে সকল ছাত্র ছাত্রীর থেকে সরকারি রিসিট দিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে সেশন ফি বাবদ ১৪৬০ টাকা আদায় করা হয়েছে, শুধু মাসিক বেতন এবং বোর্ড পরীক্ষার ফি বাদে। কিন্তু হঠাৎ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নোটিশ জারি করে ১০শে জুনের মধ্যে সকল ছাত্র ছাত্রী জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৬ মাসের বেতন পরিশোধ করবে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেতন ফি পরিশোধ করতে না পারলে ভর্তি বাতিল বলে গন্য হবে। এরকম চাপের মুখে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা বেতন দিতে আসলে দেখা যায় তাঁদের বেতনের প্রায় ৬/৭ গুন জরিমানা ধরা হয়েছে। প্রতিজন ছাত্র ছাত্রীর ছয় মাসের বেতন ৭২ থেকে ৯০ টাকা কিন্তু তাঁদের রসিদে ৬/৭ শত করে টাকা ধরা হয়েছে কারো কারো আরো বেশি। এই বিষয়ে স্কুল কতৃপক্ষের নিকট জানতে চাইলে কোন শিক্ষক বলছেন অনুপস্থিতি জরিমানা,কোন শিক্ষক বলছেন বিদ্যুৎ বিল সহ অন্যান্য ফি, ধরা হয়েছে, কোন কোন শিক্ষক সরাসরি প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে এসব ফি ধরা হয়েছে বলে জানান। এই বিষয় সাংবাদিকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম মতিউর রহমান কে তালাশ করলে জানা যায় সে ট্রেনিংয়ের কাজে ফরিদপুর অবস্থান করছেন। একজন শিক্ষক আমাদের জানান স্কুলের নামে যে একাউন্টে ফি জমা নেওয়া হয় সেই একাউন্ট টি হচ্ছে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের। যার জন্য টাকা উঠানোর সময় কেউ কিছু জানতে পারে না।
এর জন্য কোন শিক্ষক টাকা আদায়ের রসিদেছাত্রী সাক্ষর করেনি। এ নিয়ে ছাত্র ছাত্রী এবং অভিভাবকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। একজন ছাত্রের বাবা এই বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করবে বলে জানিয়েছেন।
আজকে অনেক ছাত্র ছাত্রী স্কুলের ছাপানো কতৃপক্ষের দেওয়া রসিদের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েছে, যেখানে ছাত্র ছাত্রীদের হাতের লেখা আর এনআরবিসির ব্যাংকের সিল এবং ক্যাশিয়ারের সই ছাড়া অন্য কোন শিক্ষকের সিল সাক্ষর নেই।
আদৌ কি এই একাউন্ট স্কুলের কি না? সেটা ওই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এটিএম মতিউর রহমান ছাড়া কেউ জানে না। এ নিয়ে ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে উপজেলা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের স্মারক নং ৩৭.০১.৩০৮০.১৮৭.১৪.২১.২০১৭.৯৫,এর ৬ বলা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহের আয়-ব্যায় সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় বলা আছে ছাত্র ছাত্রীদের নিকট থেকে পরিপত্রের নির্দেশনা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত কোন খাতে টাকা আদায় করা যাবে না, যেমন কোন প্রকার চাঁদা বা ছাত্র ছাত্রীদের নিকট থেকে স্কুলে অনুপস্থিতি জরিমানা আদায় করা যাবে না। ৭,রেজিঃবা বোর্ড পরীক্ষায় বোর্ড নির্ধারিত ফিএর অতিরিক্ত ফি আদায় করা যাবে না।
৮! কোন প্রকার আর্থিক অনিয়মের জন্য #প্রধান শিক্ষক ব্যাক্তিগতভাবে দায়ি থাকবেন।#
স্মারক নং শিম/অডিটসেল /২৪৩/২০১১/৪৭৫ এর ২.৪ বলা আছে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা অভ্যন্তরীন অডিট কমিটি করতে হবে। অডিট কমিটি কর্তৃক প্রতি বছর অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা সম্পুর্ন প্রতিবেদন একাডেমিক কাউন্সিল প্রতিষ্ঠান প্রধান,মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়য়ে দাখিল করতে হবে। যে কমিটি সরকারি জাজিরা মোহর আলী মডেল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গঠন করেনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম মতিউর রহমান। বিদ্যালয় পরিচালনা বা অভ্যন্তরীন কোন কমিটি-ই নেই বর্তমানে ৪/৫ বছর যাবত। বিদ্যালয় টি ২০১৮ সালে জাতীয় করন করা হলেও
নিজেদের খুশি মতো ছাত্র ছাত্রীদের থেকে অর্থ আদায় করে চলেছেন দিনের পর দিন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন স্কুলের আন্ডারে প্রায় ২৫ টি দোকান ভাড়া দেওয়া আছে এই দোকানের ভাড়ার টাকা কোথায় যায়? কোন খাতে খরচ করে তাকে জিজ্ঞেস করার মতো কেউ নেই কেউ কিছু জানতে চাইলে উলটো তার রোষানলে পড়তে হয়।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন,আসলে এই বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই,, আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি এই বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে শীঘ্রই ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত আমি একটু ব্যাস্ত সময় পার করছি গৃহহীন ও ভূমিহীন মুক্ত জাজিরা ঘোষনা প্রোগ্রাম নিয়ে।
এবং মাধ্যমমিক শিক্ষা অফিসার জনাব সিরাজুদ্দৌলা বলেন, সরকারি স্কুলে অনুপস্থিতি জরিমানা আদায় করার কোন সুযোগ নেই। এবং বাড়তি অর্থ আদায় করলেও সেটার দায়ভার তার নিতে হবে এই বিষয়ে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম মতিউর রহমান ফরিদপুর অস্থান করার কারনে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।