মাসুদুল হাসান মাসুদ:
প্রচ- গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। জ্বর, ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এইসব কারণে ভূঞাপুর হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভিড়। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সব বয়সের মানুষের কষ্ট হলেও এই গরম সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে শিশু ও বয়স্কদের। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর প্রায় ৬০ শতাংশই শিশু ও বয়স্করা। তাই গরমে সুস্থ থাকতে অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে না যাওয়া, সুতি কাপড় পরা এবং বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ভূঞাপুর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের পর হাসপাতালে রোগীর ভিড় বাড়ছে প্রায় দুই গুণ। তাদের সিংহভাগই শিশু এবং বয়স্ক।
ভূঞাপুর হাসপাতালের আরএমও ডা. এনামুল হক সোহেল জানান, আবহাওয়ার পরিবর্তন, অনাবৃষ্টি, গরম এসবের কারণেই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ সময় শিশুর পোশাক, বিছানা ও ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ঘাম দিলে শিশুর শরীর দ্রুত মুছে ফেলতে হবে। শিশুর যাতে ঠান্ডা না লাগে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে অনেকটা ছুটির আমেজে আছে। স্কুল খুলে দিলে শিশুরা পানি থেকে শুরু করে বাইরের খাবারে ঝুঁকে পড়বে। এতে করে পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি ডায়রিয়া, জন্ডিস, হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে মাঠে-ময়দানে কাজ করা রিকশাওয়ালা ও শ্রমিক শ্রেণির লোকজন হিটস্ট্রোকেরও সম্ভাবনায় থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন রোগী বেশি। টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রচ- ভিড়। টিকিট নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন জরুরি বিভাগের সামনে। শিশু ওয়ার্ডের শয্যা, মেঝে, বারান্দা সবখানেই রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভিড়।
ভূঞাপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুস সোবহান বলেন, গরমের এ সময়ে শিশুদের রোদ বা ঘরের বাইরে না নেওয়াই ভালো। শিশুরা বড়দের মতো আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না। গরমের সময় সাধারণত জ্বর, ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা, ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ, শরীরে পানিশূন্যতা বা স্বল্পতা রোগী বেশি দেখা যায়। গরমের এ পরিস্থিতিতে ফলের শরবত, ডাবের পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন, গ্লুকোজ ও পুষ্টিকর রসাল ফল বেশি করে খেতে হবে। এতে শরীর থেকে ঘাম হয়ে বের হয়ে যাওয়া পানির চাহিদা পূরণ হবে। তবে গরমের কারণে ঠান্ডা পানি, বরফ কিংবা রাস্তার পাশের বিভিন্ন ধরনের শরবত এবং খোলা খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুদের এই গরমে ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করতে হবে, নিয়মিত গোসল করাতে হবে। এ সময় বাচ্চাদেরকে অবশ্যই ফুটানো পানি ও ফ্রেশ খাবার খাওয়াতে হবে।