ক্রীড়া ডেস্ক:
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এবার অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাদের। বৃষ্টিতে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগির পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারে একটা সময় সুপার এইটে ওঠাই তাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত সেরা আট দলের মধ্যে জায়গা করে নেয় তারা। সেখানেও শঙ্কা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দারুণ জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে বিদায়ঘণ্টা বাজছিল। অনেক হিসাবনিকাশের সামনে দাঁড়িয়ে আবার জ্বলে উঠলো তারা। দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দিয়ে এবারের আসরে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো।
সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড ১০ উইকেটে হারিয়েছে এবারের চমক যুক্তরাষ্ট্রকে। বিশাল জয়ে তিন ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সমান চার পয়েন্ট পেয়েও নেট রান রেটে তাদেরকে পেছনে ফেলে সেমিফাইনালে ইংলিশরা। সোমবার সকালে মুখোমুখি হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডের সঙ্গে কে যাচ্ছে সেমিফাইনালে, সেই উত্তর মিলবে এই ম্যাচ শেষে।
রবিবার বার্বাডোজে টসে জিতে বোলিং নিয়েছিলেন বাটলার। তাকে বোলাররা আশাহত করেননি। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রিস টপলি পান আন্দ্রিয়েস গাওসের উইকেট। স্যাম কারানের শিকার হন স্টিভেন টেলর। পাওয়ার প্লে শেষে যুক্তরাষ্ট্রের স্কোর কিন্তু মন্দ নয়। ২ উইকেটে ৪৮ রান।
এরপর ইংল্যান্ডের স্পিনে অস্বস্তিতে ভোগে আমেরিকা। আদিল রশিদ তার গুগলি দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন। লিয়াম লিভিংস্টোন নিজের শেষ বলে উইকেট পান। দুই স্পিনার মিলে ৮ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।
হারমীত সিং কয়েকটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র নাটকীয় ধসের মুখোমুখি হয় ক্রিস জর্ডানের বলে। নিজের জন্মস্থান বার্বাডোজে ইতিহাস গড়েন ইংল্যান্ডের পেসার।
হারমীতের দুর্দান্ত ক্যাচ নেওয়ার পর পাঁচ বলে চার উইকেট পান জর্ডান। ৩৫ বছর বয়সী পেসার ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথম হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন। ৫ উইকেটে ১১৫ রান করা যুক্তরাষ্ট্র অলআউট হয় ১১৫ রানেই।
আয়ারল্যান্ডের কুর্টিস ক্যাম্ফারের পর বিশ্বকাপের এক ওভারে চার উইকেট নেওয়া দ্বিতীয় বোলার জর্ডান। তার আগুন বোলিংয়ে অল্প রানেই আমেরিকাকে আটকে দেয় ইংল্যান্ড। ২.৫ ওভারে ১০ রান দিয়ে চার উইকেট নেন জর্ডান। তবে ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন রশিদ।
নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে সেমিফাইনালে যেতে ইংল্যান্ডকে ১১৬ রান করতে হতো ১৮.৪ ওভার বা তারও আগেই।
প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৬ রান তুলে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল ইংল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে বাটলার দুটি ছয় ও এক চারে ১৯ রান তুলে নেন। ফিলিপ সল্টকে নিয়ে তার আগ্রাসী ব্যাাটিংয়ে ইংল্যান্ড পাওয়ার প্লে শেষে কোনও উইকেট না হারিয়ে তোলে ৬০ রান।
নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন বাটলার। হারমীতের পরের চার বলেও ছয় হাঁকান ইংলিশ অধিনায়ক। ওই ওভারে ৩২ রান যোগ হয় স্কোরবোর্ডে। পরের ওভারে আর চার বল খেলেই জিতে যায় ইংল্যান্ড। ম্যাচজয়ী বাউন্ডারি মারেন বাটলার। ৯.৪ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে ১১৭ রান করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
৩৮ বলে ৬ চার ও ৭ ছয়ে ৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন বাটলার। ২১ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থেকে তাকে সঙ্গ দেন সল্ট।