নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঢাকার বাসিন্দা ও ঢাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের ভ্রমণের অন্যতম প্রধান স্থান জাতীয় চিড়িয়াখানা। এর পাশেই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেও সময় কাটাতে আসেন অনেকে। তবে দর্শনীয় স্থান দুটির গেট থেকে রাইনখোলা মোড় পর্যন্ত ৮০০ মিটার অংশে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। সড়কজুড়ে যেখানে সেখানে বর্জ্য, অপরিচ্ছন্ন রাস্তা, সারি সারি বাস পার্কিং এবং গাড়ির গ্যারেজগুলোর ফুটপাত দখলের কারণে ঘুরতে আসা মানুষের যেমন হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে, তেমনি চিড়িয়াখানার গেট পর্যন্ত জ্যামে বসে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।
চিড়িয়াখানামুখী সড়কে ভোগান্তির শুরু হয় রাইনখোলা মোড়ে অবস্থিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ময়লা রাখার সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) থেকে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এখানে বাসাবাড়ির ময়লা এনে জমা করা হয়। সেখান থেকে ময়লা ট্রাকে করে ল্যান্ডফিলে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলে নানা সময়। এর ফলে যেমন রাস্তার দুই-তৃতীয়াংশ এই কাজে দখল থাকে, তেমন দুর্গন্ধের কারণে পাশ দিয়ে যাওয়াটাও কষ্টকর। চিড়িয়াখানায় আসার সড়কে এমন ময়লার এসটিএস রাখা নিয়ে আপত্তি এলাকাবাসীরও। তবে আপত্তি থাকলেও ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সেখানেই আরও একটি এসটিএস বানানো হচ্ছে।
এছাড়া যেখানে খুশি সেখানে বাস পার্কিং করে রাস্তার এক অংশ দখল করে রাখা হচ্ছে। সড়কের পাশেই আবার চলছে গাড়ি মেরামতের কাজ। গাড়ি মেরামতের ওয়ার্কশপগুলো ছাড়িয়ে বসেছে রাস্তার ওপর।
স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম খলিল বলেন, দূর থেকে যারা আসেন তারা হয়তো বাসে করে সরাসরি চিড়িয়াখানার গেটের কাছে নামেন। তবু এখান থেকে পার হবার সময় পুরা বাসে দুর্গন্ধ চলে আসে। আর আমরা স্থানীয়রা চাইলে এটুকু পথ হেঁটে গিয়ে জাতীয় উদ্যানে সময় কাটাতে পারি। কিন্তু এই দুর্গন্ধের কারণে এদিক যেতেই ইচ্ছে করে না। তাছাড়া পুরা সড়কের যত্রতত্র ময়লা পড়া থাকে। আগ্রহ হয় না সেখানে যাওয়ার।
বিকালে হাঁটাহাঁটির জন্য এই সড়কটিও চমৎকার এক জায়গা হতে পারতো মন্তব্য করে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রোমানা সুলতানা বলেন, এই রাস্তার পাশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ আছে। রাস্তার ওপর বাস ও ওয়ার্কশপ না থাকলে জায়গাটা সুন্দর দেখাতো। কিন্তু সবচেয়ে বাজে অবস্থা এই রাস্তার। যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ। পুরো রাস্তাটা দেখলে মনে হবে বাসের ওয়ার্কশপ। রাস্তার পাশেই বাস সারায় তারা।
ময়লার এসটিএসের বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান বলেন, এটা নিয়ে নানা আপত্তির কথা জেনেছি। এসটিএস থেকে গন্ধ ছড়ায় মূলত ভাঙারিওলাদের কারণে। তারা ময়লা নিয়ে এসে নানা জিনিসপত্র খুঁজতে ময়লা ঘাঁটে। এছাড়া ময়লা থেকে খুঁজে পাওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র রেখে রাস্তা অনেকটাই দখল করে রাখে।
গন্ধ ছড়ানোর বিষয়ে সঠিক সমাধানের কথা না জানালেও এসটিএসের সৌন্দর্য বাড়ানো হবে বলে জানান ডিএনসিসির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা ভাবছি এসটিএসে রঙ করে সৌন্দর্য বাড়াবো, যাতে এই সড়ক দিয়ে আসা মানুষজনের কাছে দৃষ্টিকটু না লাগে।
এক এসটিএসের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা, তবু কেন পাশেই আরেকটি এসটিএস তৈরি করা হচ্ছে জানতে চাইলে মোহাম্মদ ফিদা হাসান বলেন, এই এলাকায় অনেক ময়লা বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হয়, সেগুলো কোথাও রাখার জন্য জায়গা পাওয়া যায় না। কোথাও নতুন এসটিএস তৈরির জায়গাও পাওয়া যাচ্ছে না। এই ময়লাগুলো কোথায় রাখবো বলেন। আমরা চেষ্টা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসটিএসগুলো থেকে ময়লা সরিয়ে নেওয়ার।