সংবাদ শিরোনাম:

কৃষকের ঘরে নেই ধানের গোলা

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

নিজস্ব প্রতিনিধি:

একটা সময় ছিল গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এক একটি করে ধানের গোলা ছিল। সেই কৃষক হোক বর্গাচাষি অথবা জমির মালিক। এমনকি গ্রামের বিয়ে-শাদি পর্যন্ত হতো গৃহস্থের ঘরে ধানের গোলা আছে কি না, সেটা দেখে। কিন্তু কালের আবর্তে অটো রাইস মিল আর আমদানিকৃত চালের কারণে এখন সেই ধানের গোলা আর দেখা যায় না।
এর অবশ্য অন্য কারণও আছে। বৃষ্টিসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, সেই সঙ্গে শ্রমিক সংকটের কারণেও ধান শুকিয়ে গোলায় রাখার মতো কষ্টসাধ্য কাজ সাধারণত কেউ করতে চান না। এ কারণেই ধান ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কাঁচা ধানই সবাই নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিপরীতে বেশি দামে নগদ টাকায় চাল কিনে খাচ্ছেন।
যে কারণে ফায়দা লুটছে এক শ্রেণির মৌসুমী ফরিয়া এবং মিল মালিকেরা। ধান ওঠার মৌসুমের শুরুতেই সব ধান চলে যাচ্ছে মিল মালিক এবং মজুতদারদের গোডাউনে। এমনিতেই ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে মণপ্রতি নিচ্ছে ৪২ কেজি থেকে ৪৫ কেজি পর্যন্ত।
স্থানীয় ভাবে ধানের বাজারদর ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত। সরকারি বেঁধে দেওয়া ধানের ন্যায্য মূল্য কাগজে-কলমেই রয়ে যায়। এর সুবিধা পায় না স্থানীয় কৃষক, বর্গাচাষি কিংবা জমির মালিকেরা। সব লাভ মধ্যস্বত্বভোগীদের দখলে চলে যায়। কৃষকের উৎপাদিত ধানই পরে তাকে বেশি দামে কিনতে হয়। চাল কিনতে হয় আরও বেশি দাম দিয়ে।
হঠাৎ যদি কোনো কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা জাতীয় কোনো সংকট দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে স্থানীয় ভাবে কয়েক দিন খাদ্য সংকট মেটানোর মতো ধান মজুত ব্যবস্থা নেই স্থানীয় মানুষের হাতে। যা দুর্ভিক্ষের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় ভাবে ধানের মজুতকরণ অত্যন্ত জরুরি।
ফলে আমাদের কৃষিমুখী হতে হবে। যে কোনো পেশার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করা উচিত। কারোনার মতো সংকটেই দেখেছি, জিনিসপত্রের দাম কীভাবে বেড়ে যায়। তাছাড়া প্রতিনিয়তই বাড়ছে বাজারদর। তাই কৃষকের গোলায় ধান-চাল না থাকলে এক সময় তাকেই থাকতে হবে না-খেয়ে। বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে।

Facebook
LinkedIn
WhatsApp
Email
Print

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *