মোঃফারুক আহম্মেদ মোল্লা:
বাবা হারা সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন সংগ্রাম করছিলেন মা তাসলিমা বেগম। অভাবের সংসারে কোনোমতে মেয়ে হাবিবাকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দিলেও মায়ের ভাবনা ছিল কলেজের ভর্তি নিয়ে। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জেলা কমাড্যান্ট মো. মইনুল ইসলাম, কথা অনুযায়ী হাবিবার কলেজে ভর্তি নিশ্চিত করে বুধবার বিকেলে হাবিবার বাড়িতে গিয়ে চেয়ার, টেবিলসহ একাদশ শ্রেণীর এক সেট বই, খাতা-কলম, শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক এ কে এম আমিনুল হকের লেখা আনসার বাহিনীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার অবদান সম্পর্কিত বিভিন্ন বইপত্র তুলে দেন। তাই বিয়ের পিঁড়িতে না বসে কলেজে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হলো হাবিবার।
মা দিবসের দিন হাবিবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। মা দিবস উপলক্ষ্যে তাসলিমা বেগম বলেছিলেন, মেয়ে আজ যে সুসংবাদ দিয়েছে, তাতে আমি কষ্ট ভুলে গেছি’। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওই দিনই হাবিবার বাড়িতে গিয়ে জেলা মাড্যান্ট মইনুল ইসলাম নতুন জামা মিষ্টি ও নগদ কিছু টাকা নিয়ে তাসলিমা বেগমের সঙ্গে দেখা করেন হাবিবার বাবা দুলাল সরদার চার বছর আগে মারা যান। এরপরই সংসারের অভাবে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষ, সেলাই মেশিনে জামা তৈরী করে ছেলে-মেয়ের মুখের আহার সংগ্রহ করতে হতো তাসলিমার।
মেয়ে কলেজে ভর্তির পরে এমন উপহার পেয়ে তাসলিমা বেগম বলেন, বাবা হারা আমার মেয়ে কলেজে পড়বে ভাবতেও পারিনি। আমি আনসার বাহিনীর জন্য দোয়া করি।
হাবিবা আক্তার বলেন, আনসার বাহিনী আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে। এতে আমি অনেক খুশি, তারা এই ধারা বজায় রাখলে আমার মত অনেকেই পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে।
ডগ্রী ইসমাইল কলেজের উপাধ্যক্ষ কমলেশ চক্রবর্তী বলেন, হাবিবা ও তার মায়ের জীবন সংগ্রামের বিস্তারিত জানতে পেরে কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাবিবার ভর্তি ফিসহ কলেজের সকল ফি মওকুফ করা হয়েছে।
আনসার বাহিনীর শরীয়তপুরের জেলা কমাড্যান্ট মো. মইনুল ইসলাম বলেন, আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় গ্রাম পর্যায়ে আনসার বাহিনীর সেবা পৌঁছে দিতে মানবিক এমন কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করেন। হাবিবার পড়াশোনার সকল খরচ আনসার বাহিনীর পক্ষ থেকে বহন করা হয়েছে।তাকে কলেজে ভর্তি করা হয়েছে, তারপরও লেখার বই টেবিল চেয়ার টেবিল সকল কিছু দেয়া হয়েছে এবং আনসার বাহিনীর পক্ষ থেকে তার থাকার ঘরটি করে দেয়া হবে, আনসার বাহিনী হাবিবার পাশে থাকব।