ক্রীড়া ডেস্ক:
স্কোর: বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৭৪.২ ওভারে ২৩৩/১০ (মুমিনুল ১০৭*; শান্ত ৩১, সাদমান ২৪, জাকির ০, মুশফিক ১১, লিটন ১৩, সাকিব ৯, মিরাজ ২০, তাইজুল ৫, হাসান ১, খালেদ ০)
বৃষ্টি বিঘ্নিত টেস্টে ব্যাট হাতে একমাত্র নজর কাড়লেন মুমিনুল হক। তার সেঞ্চুরিতে ভর করেই লড়াই করেছে বাংলাদেশ। বাকিরা যোগ্য দিতে পারেননি। তাতে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে থেমেছে বাংলাদেশ দল। শেষ উইকেট হিসেবে রবীন্দ্র জাদেজা খালেদ আহমেদকে বিদায় দিলে লাল-সবুজদের ইনিংস শেষ হয় ৭৪.২ ওভারে। খালেদের উইকেট নিয়ে টেস্টে তিনশ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন জাদেজা।
সকালের সেশনে একে একে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক, সাকিব ও লিটন। তার পর সপ্তম উইকেটে জুটি গড়েন মুমিনুল ও মিরাজ। এই জুটিতে ভর করেই স্কোর দুইশ ছাড়িয়েছে। লাঞ্চের পর ৫৪ রানের এই জুটি ভাঙতেই প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে পড়ে। শুধু প্রান্ত আগলে ১০৭ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল। তার ১৯৪ বলের ইনিংসে ছিল ১৭টি চার ও ১টি ছয়।
ভারতের হয়ে ৫০ রানে তিন উইকেট নিয়ে সেরা বোলার জসপ্রীত বুমরা। দুটি করে নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আকাশ দীপ। একটি নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা।
হাসানকেও বিদায় দিলেন সিরাজ
নতুন নামা পেসার হাসান মাহমুদও মুমিনুল হকের সঙ্গী হতে পারলেন না। মোহাম্মদ সিরাজের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ১ রানে ফিরেছেন। তাতে পড়েছে নবম উইকেট। অবশ্য আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি। যদিও ভাগ্য বদলায়নি তাতে।
তাইজুলের বিদায়ে পড়লো অষ্টম উইকেট
মিরাজের বিদায়ের পর অষ্টম উইকেট পড়তেও সময় লাগলো না। প্রতিরোধ গড়তে পারেননি তাইজুল ইসলাম। জসপ্রীত বুমরার বলে ৫ রানে বোল্ড হয়েছেন তিনি। তাইজুল ছিলেন বুমরার তৃতীয় শিকার।
মিরাজের বিদায়ে ভাঙলো ৫৪ রানের জুটি
চতুর্থ দিনে এখন পর্যন্ত বড় পার্টনারশিপ বলতে মুমিনুল হক-মেহেদী হাসান মিরাজের। লাঞ্চের আগে থেকে প্রতিরোধ গড়ে খেলছিলেন তারা। বিরতি থেকে ফেরে পঞ্চাশ পূরণ করে তাদের জুটি। সম্ভাবনাময় জুটিটি ভেঙেছে মিরাজের বিদায়ে। জসপ্রীত বুমরার বলে খোঁচা মারতে গিয়ে স্লিপে শুবমান গিলের কাছে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। তাতে ৪২ বল খেলা মিরাজকে ২০ রানে থামতে হয়েছে। তার বিদায়ে ভেঙেছে ৫৪ রানের জুটি।
মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে শেষ প্রথম সেশন
কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে টানা দুই দিন খেলা গড়ায়নি। চতুর্থ দিন খেলা গড়ালেও ব্যাট হাতে শক্ত প্রতিরোধ ছিল না বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে বাংলাদেশের তিন উইকেট পতনের বিপরীতে প্রাপ্তি বলতে মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি। তার প্রতিরোধেই বাংলাদেশ দুইশ পার করে এগিয়ে চলেছে। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ২০৫ রান। বিরতিতে যাওয়ার আগে ১৭২ বলে ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরির দেখা পান মুমিনুল। তিনি এখন ১০২ রানে ব্যাট করছেন। তার সঙ্গে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ৬*।
বিরতির আগে মুমিনুল ৯৫ রানে থাকা অবস্থায় মোহাম্মদ সিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ উঠেছিল। কিন্তু কোহলি সেটা হাতে নিতে পারেননি।
সকালের শুরুতে মুমিনুল দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রান্ত ধরে রাখলেও অপরপ্রান্ত ছিল নড়বড়ে। একে একে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান। তার মধ্যে শেষ দুটি উইকেট পতনে ভারতের অসাধারণ ফিল্ডারদের কৃতিত্ব।
বৃষ্টির কারণে সময় নষ্ট হওয়ায় বাড়তি সময় যোগ হয়েছিল প্রথম সেশনে। সোয়া দুই ঘণ্টার সেশনে ৩১ ওভারের খেলা হয়েছে। বাংলাদেশ ৯৮ রান যোগ করেছে ৩ উইকেট হারিয়ে।
সাকিবের বিদায়ে বিপদে বাংলাদেশ
রোহিত শর্মার অসাধাণ ক্যাচে ফিরেছেন লিটন দাস। এবার মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন সাকিব আল হাসানও। রবিচন্দ্রন অশ্বিন দিনের প্রথম ওভার করতে এসেই সাফল্য পেয়েছেন। যার মূল কৃতিত্ব অবশ্যই সিরাজের।
এগিয়ে এসে বিলাসী শট খেলার চেষ্টা করেছিলেন টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়া সাকিব। তার ওপর ছিল না হাতের নিয়ন্ত্রণ। ব্যাট থেকে একহাত ছুটেও যায়। বল অনেক উপরে উঠে যাওয়ার পরও সেটা হাতছাড়া হতে দেননি সিরাজ। শরীর যথেষ্ট বাঁকিয়ে এক হাতেই ক্যাচ নেন তিনি। তাতে ১৭ বল খেলা সাকিব ৯ রানে বিদায় নিলে দিনের প্রথম সেশনেই বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ।
রোহিতের অসাধারণ ক্যাচে ফিরলেন লিটন
মুমিনুল হক প্রান্ত ধরে খেললেও সঙ্গীদের পক্ষ থেকে যোগ্য সমর্থন পাচ্ছেন না। লিটন দাসই যেমন ওয়ানডে মেজাজে খেলতে গিয়ে বিদায় নিয়েছেন। মোহাম্মদ সিরাজের ৪৯.৪তম ওভারে ডাউন দ্য উইকেটে এসে শট খেলার চেষ্টায় রোহিত শর্মার অসাধারণ ক্যাচে ফিরেছেন তিনি। রোহিত এক হাতে এমন ক্যাচ নিবেন, সেটা প্রত্যাশা করেনি কেউ। লিটনও অবাক হয়ে যান। তাতে ৩০ বলে ১৩ রানে থামতে হয়েছে তাকে।
রিভিউতে বাঁচার পর মুমিনুলের ফিফটি
মুশফিকুর রহিম আউট হলেও প্রান্ত আগলে প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন মুমিনুল হক। ৪৬তম ওভারে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটি। তিনি হাফসেঞ্চুরির দেখা পান ১১০ বলে। তার আগের বলে অবশ্য রিভিউ নিয়ে বেঁচেছেন তিনি। মোহাম্মদ সিরাজের বাউন্সারে বল ব্যাটে লেগে শর্ট স্কয়ার লেগ ফিল্ডারের হাতে গেছে ভেবে আউট দেন আম্পায়ার। মুমিনুল রিভিউ নিলে দেখা যায় বল ব্যাটে লাগেনি। শুধু প্যাডে আঘাত করে উপরে উঠেছে।
বুমরার বল ছেড়ে বোল্ড মুশফিক
খেলা যথা সময়ে গড়ালো ঠিকই কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট মেজাজের ব্যাটিংটা দেখা গেলো না। দিনের শুরুতে পাঁচ ওভার পর্যন্তই টিকলেন মুশফিকুর রহিম। আগের ৬ রানের সঙ্গে যোগ করতে পারলেন ৫ রান। জসপ্রীত বুমরার ৪১তম ওভারে শেষ পর্যন্ত আউট হলেন দৃষ্টিকটূভাবে! অফস্টাম্প থেকে বল ভেতরে ঢুকে পড়েছিল। আগের ডেলিভারির মতো বাউন্স আশা করে মুশফিক সেই বল ছেড়ে দিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। বল আঘাত করে স্টাম্পে। তাতে ৩২ বল খেলা মুশফিক সাজঘরে ফিরেছেন ১১ রানে।
কানপুরে যথা সময়েই শুরু হচ্ছে খেলা
টানা দুই দিন খেলা গড়ায়নি বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিতীয় টেস্টে। প্রথম দিন শুধু ৩৫ ওভার মাঠে গড়িয়েছে। মাঝে দুই দিন ভেসে গেছে। চতুর্থ দিন অবশ্য যথা সময়েই মাঠে খেলা গড়াচ্ছে। সকাল থেকেই এদিন কানপুরের আকাশে উঁকি দিয়েছে সূর্য। তাই যথা সময়ে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় খেলা গড়াচ্ছে। দুই দলের খেলোয়াড়রাও ওয়ার্ম আপও করেছেন অনেক্ষণ।
কানপুরে বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনও খেলা পুরোপুরি মাঠে গড়ায়নি। হয়েছে মাত্র ৩৫ ওভার। বিলম্বে হয়েছে টস। প্রথম দিন প্রথম ইনিংসে টস হেরে ৩ উইকেট হারিয়ে ১০৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন মুমিনুল হক ৪০* ও মুশফিকুর রহিম ৬*। দ্বিতীয় দিন বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলেও তৃতীয় দিন খেলা পরিত্যক্ত হয়েছে মাঠ ভেজা থাকায়। তিনদিন সময় নষ্ট হওয়ায় আজ সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খেলা গড়ানোর কথা বলা হয়েছে।